বাস্তুতন্ত্র কি বা বাস্তুতন্ত্র কাকে বলে? ইকোসিস্টেম কি?

বাস্তুতন্ত্র কি বা বাস্তুতন্ত্র কাকে বলে? ইকোসিস্টেম কি?

কোনো একটি পরিবেশের অজীব এবং জীব উপাদানসমূহের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া, আদান-প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবেশে যে তন্ত্র গড়ে উঠে তাকেই বাস্তুতন্ত্র বলে।

অর্থাৎ বাস্তুতন্ত্র হলো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমস্ত জীবন্ত জিনিস যেমন: উদ্ভিদ, প্রাণী এবং জীব যেখানে জীবিত প্রাণীরা একে অপরের সাথে এবং পার্শ্ববর্তী পরিবেশের সাথে যোগাযোগ করে। বাস্তুতন্ত্রকে আপনি বলতে পারেন জীব এবং তাদের পরিবেশের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার একটি শৃঙ্খল।

বাস্তুতন্ত্র দুই প্রকার:

  1. স্থলজ বাস্তুতন্ত্র– এটি আবার বিভিন্ন প্রকার হতে পারে যেমন: বনভূমির বাস্তুতন্ত্র, মরুভূমির বাস্তুতন্ত্র ইত্যাদি।
  2. জলজ বাস্তুতন্ত্র– জলজ বাস্তুতন্ত্র আবার তিন প্রকার যথা: পুকুরের বাস্তুতন্ত্র, নদ-নদীর বাস্তুতন্ত্র এবং সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র।

বাস্তুতন্ত্রের উপাদান: বাস্তুতন্ত্রের দুইটি প্রধান উপাদান হলো:

  1. অজীব উপাদান
  2. জীব উপাদান

আজীব উপাদান: প্রানহীন সকল উপাদানকে অজীব উপাদান বলা হয়। যেমন: লবণ, মাটি, আলো, জীবের মৃত দেহাবশেষ ইত্যাদি।

আজীব উপাদান ২ প্রকার: 

  1. অজৈব/ভৌত উপাদান: অজৈব উপাদানের উদাহরণ হলো মাটি, পানি, আলো, বায়ু, তাপ আর্দ্রতা ইত্যাদি।
  2. জৈব উপাদান: জীবের মৃত ও গলিত দেহাবশেষ জৈব উপাদান হিসাবে পরিচিত।




জীব উপাদান: আমাদের পরিবেশের সকল জীবন্ত অংশেই বাস্তুতন্ত্রের জীব উপদান। যেমন: মানুষ, গোরু, ছাগল, পাখি, ব্যাঙ ইত্যাদি।

জীব উপদানকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়: 

  1. উৎপাদক: যারা নিজেদের খাবার নিজেরা তৈরি করতে পারে তাদেরকে উৎপাদক বলে। যেমন: উদ্ভীদ।
  2. খাদক: যেসব প্রাণী বা যারা উদ্ভীদ বা প্রাণী থেকে খাদ্য গ্রহণ করে তাদেরকে খাদক বলে। যেমন: মানুষ, গোরু, ছাগল ইত্যাদি।
  3. বিযোজক: বিযোজককে পচনকারী নামেও অভিহিত করা হয়। যেসব অনুজীব(ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক) মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহের উপর কিয়া করে তা থেকে কিছু অংশ নিজেরা শোষণ করে এবং বাকি অংশ পরিবেশের মাটি ও বায়ুতে জমা হয় তাকে বিয়োজক বলে।




বাস্তুতন্ত্র জীব এবং অজীব সম্প্রদায়কে একসাথে যোগাযোগ করে। বাস্তুসংস্থান যেমন পরস্পর নির্ভরশীল তাই বাস্তুতন্ত্রের প্রতিটি অংশই গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতিগ্রস্থ বা ভারসাম্যহীন বাস্তুতন্ত্র অনেক সমস্যা তৈরি করতে পারে।

সূর্যকে পৃথিবীর শক্তির মূল উৎস বলা হয়। সূর্য সকল উদ্ভিদ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে। গাছপালা এই শক্তিটিকে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াটির জন্য ব্যবহার করে, যা তাদের খাদ্য সংশ্লেষ করতে ব্যবহৃত হয়। এই জৈবিক প্রক্রিয়া চলাকালীন, হালকা শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং ক্রমাগত স্তরের মধ্য দিয়ে যায়। যার মাধ্যমে খাদ্য প্রাপ্যতা সহজলভ্য হয়ে উঠে।

Related posts

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.